বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আজ আমি এমন একটা টপিক নিয়ে কথা বলব, যা নিয়ে আপনাদের অনেকের মনেই হয়তো অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশেষ করে যারা নতুন ব্লগিং শুরু করতে চাইছেন বা পুরোনো ব্লগার হয়েও AI টুল ব্যবহার করে কনটেন্ট তৈরি করতে আগ্রহী, তাদের জন্য আজকের লেখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আজকের আলোচনার মূল বিষয় হলো, AI দিয়ে ব্লগ লিখে AdSense পাওয়া কি সম্ভব? “AI দিয়ে লেখা ব্লগ পোস্ট কি Google AdSense অ্যাপ্রুভ করে?”
ChatGPT, Gemini-এর মতো AI টুলগুলো আসার পর থেকে কনটেন্ট তৈরি করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। কিন্তু প্রশ্নটা হলো, গুগল কি এই AI-জেনারেটেড কনটেন্টকে ভালোভাবে দেখে? আর সবচেয়ে বড় কথা, এই ধরনের লেখা দিয়ে কি Google AdSense পাওয়া যায়?
চলুন, এই রহস্যের গভীরে ডুব দিই এবং পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কার করে বুঝি।
AI কনটেন্ট কী এবং গুগল কেন এটিকে গুরুত্ব দেয়?
AI কনটেন্ট মানে হলো, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) ব্যবহার করে তৈরি করা যেকোনো লেখা। এটি কোনো মানুষের হাতের লেখা নয়, বরং মেশিন লার্নিং (Machine Learning) এবং ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং (Natural Language Processing) প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি হয়।
গুগল সবসময়ই তার ব্যবহারকারীদের সেরা অভিজ্ঞতা দিতে চায়। এর মানে হলো, গুগল এমন কনটেন্টকে প্রাধান্য দেয়, যা সঠিক, তথ্যবহুল এবং পাঠকের জন্য উপকারী।
একসময় গুগলের চোখে AI কনটেন্ট ছিল স্প্যামের মতো। কিন্তু এখন প্রযুক্তি অনেক উন্নত। আজকের AI টুলগুলো মানুষের মতো করেই লিখতে পারে, এমনকি অনেক সময় মানুষের লেখার চেয়েও ভালো। তাই গুগল এখন শুধু দেখে, কনটেন্টের মান কেমন, কে লিখেছে সেটা নয়।
AdSense-এর নিয়মকানুন: AI নিয়ে কী বলছে?
আপনারা জানেন, AdSense হলো গুগলের একটি প্রোগ্রাম, যার মাধ্যমে ব্লগাররা তাদের সাইটে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে টাকা উপার্জন করতে পারে। AdSense পাওয়ার জন্য কিছু নিয়ম মানতে হয়। যেমন:
- Original Content: কনটেন্টকে অবশ্যই মৌলিক বা ইউনিক হতে হবে।
- High Quality: লেখার মান ভালো হতে হবে, কোনো ভুল তথ্য থাকা চলবে না।
- User Experience: সাইটের ডিজাইন ভালো হতে হবে এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য হতে হবে।
- Policy Compliance: গুগলের সমস্ত নীতিমালা মেনে চলতে হবে।
এখন প্রশ্ন হলো, AI দিয়ে লেখা কনটেন্ট কি এই নিয়মগুলো পূরণ করতে পারে? হ্যাঁ এবং না।
হ্যাঁ, যদি আপনি AI-কে শুধুমাত্র একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করেন। যেমন, AI দিয়ে একটি লেখার কাঠামো তৈরি করলেন, তারপর সেটার মধ্যে নিজের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং কিছু উদাহরণ যোগ করলেন। এতে কনটেন্টটি মানুষের ছোঁয়া পায় এবং গুগলের কাছে এটি স্প্যাম মনে হয় না।
না, যদি আপনি সরাসরি AI থেকে কনটেন্ট কপি-পেস্ট করেন। কোনো সম্পাদনা (editing) না করে, কোনো মানবিক স্পর্শ না দিয়ে সরাসরি পাবলিশ করলে গুগল এটিকে লো-কোয়ালিটি বা স্প্যামি কনটেন্ট হিসেবে দেখতে পারে। এতে AdSense অ্যাপ্রুভাল পাওয়া কঠিন হতে পারে।
AI দিয়ে লেখা পোস্টের কিছু বাস্তব উদাহরণ
ধরুন, আপনি “সেরা ১০টি মোবাইল গেম” নিয়ে একটি ব্লগ পোস্ট লিখতে চাইছেন।
খারাপ পদ্ধতি (AdSense অ্যাপ্রুভাল না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি):
আপনি ChatGPT-কে বললেন, “সেরা ১০টি মোবাইল গেম নিয়ে একটা আর্টিকেল লিখে দাও।” ChatGPT যা দিল, আপনি হুবহু সেটাই কপি করে আপনার সাইটে পাবলিশ করলেন। এখানে কোনো নিজস্ব মতামত নেই, কোনো নতুন তথ্য নেই, আর লেখাটা খুবই যান্ত্রিক (robotic) মনে হতে পারে। গুগল এই ধরনের লেখাকে সহজেই ধরতে পারে।
ভালো পদ্ধতি (AdSense অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি):
আপনি প্রথমে AI-কে দিয়ে একটি প্রাথমিক খসড়া (draft) তৈরি করালেন। তারপর আপনি সেখানে নিজের অভিজ্ঞতা যোগ করলেন। যেমন, “আমি এই গেমটি খেলে দেখেছি, এর গ্রাফিক্স দারুণ”, অথবা “এই গেমটি খেলতে হলে আপনার এই জিনিসগুলো প্রয়োজন হবে।” আপনি কিছু ছবি বা ভিডিও যোগ করলেন এবং লেখার মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ টোন দিলেন। এই কনটেন্টটি হবে ইউনিক এবং পাঠকের জন্য উপকারী। গুগল এই ধরনের লেখাকেই পছন্দ করে।
AI-ডিটেকশন টুল কি গুগলকে বিভ্রান্ত করতে পারে?
আজকাল ইন্টারনেটে অনেক AI-ডিটেকশন টুল পাওয়া যায়, যেমন Originality.ai, Copyleaks ইত্যাদি। অনেকেই ভাবেন, এই টুলগুলো ব্যবহার করে যদি লেখাটাকে “Human-like” প্রমাণ করা যায়, তাহলে গুগলও সেটা বিশ্বাস করবে।
কিন্তু আসল ব্যাপারটা হলো, গুগল এই টুলগুলোর চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট। গুগলের নিজস্ব AI এবং অ্যালগরিদমগুলো খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে যে একটি লেখা মানুষের দ্বারা লেখা নাকি AI-এর দ্বারা তৈরি।
সবচেয়ে বড় কথা, গুগল AI ডিটেকশনের চেয়ে কনটেন্টের মানের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়। আপনার লেখা যদি পাঠকের কাজে আসে, তাহলে গুগল সেটিকে অবশ্যই র্যাঙ্ক দেবে, সেটা AI দিয়ে লেখা হোক বা না হোক।
উপসংহার: তাহলে কি AI দিয়ে ব্লগিং করা উচিত?
এখন আসল প্রশ্নের উত্তরটা দিয়ে দিই। হ্যাঁ, আপনি AI দিয়ে ব্লগ লিখে AdSense পেতে পারেন, তবে কিছু শর্ত মেনে চলতে হবে।
AI-কে আপনার বন্ধু ভাবুন, আপনার লেখার সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করুন। এটিকে আপনার লেখার মূল ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করুন, কিন্তু আপনার নিজের মেধা, অভিজ্ঞতা এবং সৃজনশীলতা দিয়ে সেটিকে আরও উন্নত করুন।
কিছু টিপস:
- AI থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই (fact-check) করুন।
- লেখায় আপনার নিজস্ব স্টাইল এবং মতামত যোগ করুন।
- লেখাটাকে আরও আকর্ষণীয় করতে কিছু গল্প, উদাহরণ বা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা যোগ করুন।
- লেখার ভুলগুলো নিজে একবার দেখে ঠিক করুন।
তাহলে বন্ধুরা, আশা করি এই পোস্টটি আপনাদের অনেক কাজে আসবে। যদি আপনাদের মনে আরও কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমি চেষ্টা করব সবার প্রশ্নের উত্তর দিতে।
ব্লগিংয়ে AI-এর ব্যবহার এখন আর কোনো গোপন বিষয় নয়। এটি একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, যা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে আপনার ব্লগিং জীবনকে আরও সহজ এবং সফল করে তুলতে পারে।
শুভ ব্লগিং!
I think using AI for content creation is definitely a game-changer, but this post raises a great point: ensuring that the content adds real value and aligns with Google’s expectations is still critical.
“Your comment is very important. I agree with you that AI can be a great help, but the real challenge is to create content with it that is truly valuable to the reader. It is difficult to create quality content with AI alone, without a person’s own thoughts and creativity. Thank you very much for your valuable comment.”